বরিশাল ব্যুরো : বরিশাল বানারীপাড়ার মলুহার গ্রামের সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও তার বাহিনীর কাছে জিম্মি এলাকার স্থানীয় শান্তি প্রিয় সাধারণ মানুষ। কসাই হাফিজুর রহমান মিন্টু মোল্লা (৩৩), আনিছুর রহমান রাসেল মোল্লা (২৮), আফজাল মোল্লা (৫৫)। ১লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে নুর আলম (২৮) কে মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে গলায় গামছা পেচিয়ে অটোতে উঠিয়ে অপহরণ করে। পরে ৫০হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে আনা হয়। এ সকল অভিযোগ করছে বাদী নুর আলম।
আলমকে মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরুতরভাবে আহত করে মূল্যবান কাগজপত্রে স্বাক্ষর রাখার অভিযোগে বরিশাল সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালতে একটি সিআর মামলা (২৪২/১৯) দায়ের করেছে নুর আলমের বড় ভাই বাদী আব্দুর রহিম। এই মামলাটি পিবিআই তদন্ত করছে।
অপরদিকে বানারীপাড়া থানায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে এই সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধে। এখন মামলা তুলে নেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি প্রদান করে আসছে এমনকি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশনা করার জন্য সাংবাদিকদের নামে মিথ্যা মামলা করার হুমকি দিয়ে আসছে আফজাল । খুন করিয়া লাশ গুম করে ফেলার হুমকি প্রদান করার অভিযোগ এনে বানারীপাড়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করা হয়েছে। ডায়েরী নং ৯৩৯ তারিখ: ২৪.১১.১৯ খ্রি.।
স্থানীয় লোকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০ জনের একটি ভয়ঙ্কর বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছে এলাকাবাসী। এদের মধ্যে সিমান্ত (২৪) আসরাফুল (১৮) রমজান (১৯) আব্দুল্লাহ (২৪) মিরাজ (২৩) মশিউর রহমান (১৯) ইয়াসিন (৪৫) সকল কুকর্মে অংশ গ্রহণ করে। বাকীরা মাঝে মধ্যে কিছু অপারেশনে অংশ গ্রহণ করে। এই বাহিনীকে ব্যবহার করে বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে কসাই আফজাল ও তার ছেলে হাফিজুর রহমান মিন্টু কসাই।
নুর আলম অভিযোগ করে জানান, এদের কুকর্মের কোন শেষ নেই। মরা গরুর চামড়া ছিলে বিক্রী করা, গর্ভবর্তী গরু জবাই করে বারবার মাংস বিক্রী করা। ইলুহারের সাহেরা ও সুফিয়ার বাবার ওয়ারিশ থেকে বঞ্চিত করে যায়গা জমি আত্মসাত করে নেয় কসাই আফজাল। মোজাহার মাঝিকে কুপিয়ে মেরে ফেলার চেস্টাসহ তার নৌকাটাও চুরি করে নেয় কসাই আফজাল। একই বাড়ির ঈস্রাফিলের ঘর থেকে টাকা চুরির করার অভিযোগে মোজাহারের ছোট ভাই আস্রাব আলির স্ত্রী রনজুয়ারাকে অমানুষিক নির্যাতনসহ মারধর করে। মেরে ফেলার হুমকিও দিয়েছে তাকে।
ইস্রাফীলের ঘর থেকে যে টাকাটা চুরি হয় সেই টাকাটা চুরি করেছে মিন্টু ও তার মা হাফিজা। পরে চুরি করা টাকাটা ঈস্রাফিলকে ফেরত দেয়। পরে ঈস্রাফিল সবাইকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করে। আশ্রাব আলীর স্ত্রী রনজুয়ারা ঈস্রাফিলের কাছে মিথ্যে অভিযোগ এনে নির্যাতনের বিচার চায় ইস্রাফীলের কাছে। কিন্তু তারা কোন এই ভয়াবহ নির্যাতনের বিচার করে করে দেয়নি। অপর একটি চুরির ঘটনায় জামাল নামের একজনকে চুরির দায়ে ধরে আনে মিন্টু ও তার বাহিনী। পরে প্রমাণ হয় টাকা জামাল নেয়নি। গরীব অসহায় মানুষিক রোগী তোতা বিবির মত ভিখারির টাকা মেরে দেয় আফজাল।
স্থানীয়রা আরো জানায়, গনি মিয়াকে অপহরণ করে মিন্টু রাসেলসহ তার বাহিনি ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। সোবাহানের মেয়ের বিয়ের টাকা মেরে দেয় আফজাল। আমির হোসেন মৌলভীর ফার্ম থেকে মুরগি নিয়ে ৪০ হাজার টাকা মেরে দেয় সন্ত্রাসী গ্রুপের গডফাদার আফজাল। আফজালের বড় ভাই নজরুলের কাছে জায়গা বিক্রি করে। সেই জায়গা দখল নিতে দেয়নি আফজাল কসাই, ছেলে মিন্টু কসাই ও রাসেল কসাই। তিন জনই যার যার শশুর বাডি ঘর জামাই থাকে। ঘর জামাই থেকে শশুরের অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নেয়াসহ বিভিন্নভাবে অবৈধ ও বেআইনীভাবে অনেক টাকার মালিক বনে গেছেন। সন্ত্রাসীদের গডফাদার কসাই আফজালের কাছে মোবাইল ফোনে এঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমি সংক্রন্ত বিরোধের জেরে আমার নামে মামলা দিছে যা পিবিআই তদন্ত চরছে ।
স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ইস্রফিল জানান, আমি এটা জানি আজালের ছেলে মিন্টু নুর আলমকে আটকে ১লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে, পরে ৫০হাজার টাকা দিলে নুর আলম ছাড়া পায়। পরে মিন্টুসহ কয়জনের নামে মামলা করে এটাও শুনেছি।
আফজালের ছেলে হাফিজুর রহমান মিন্টু জানান, নুর আলমের সাথে ঘটনা ঘটার দুইদিন আগে নুর আলম আমার বাবাকে মেরেছে, সেই কথা শুনে আমার ছোট ভাই রাসেল দুইদিন পরে নুর আলমকে ধরে আনে। আর ১লক্ষ টাকা চাদা চেয়েছি ও ৫০হাজার টাকা দিলে আমরা তাকে ছেরে দেই এই কথা মিথ্যা।
বাদী: নুর আলম আরো জানান. আমার একটা সাড়ের দোকান আছে। রাত সাড়ে ৯টার সময় আমি সেই দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যাওয়ার পথে মিন্টু ও তার ছোট ভাই রাসেলসহ আমার পথ আটকে বলে কিরে তুই নাকি সাড়ের দোকান কিনছোস, আমি বলছি হু কিনছি, মিন্টু বলে তুই যদি দোকান চালাস তাহলে আমাকে এখন ১লক্ষ টাকা দিবি না হয় জীবনে কোনদিন বাড়িতে ফিরে যেতে পারবিনা। মানুষ কথা বলে আমার গলায় গামছা পেচিয়ে মেরে ফেলার চেষ্ট করে, আর বলে টাকা দিবি কিনা বল। পরে আমি আমার জীবন বাচাতে ৫০হাজার টাকা দিতে রাজি হয়েছি, ৫০হাজার টাকা আমি তাকে দিলে আমাকে ছাড়ে। আমি মিন্টুসহ আরো ১০/১২ জনের নামে মামলা করি।