মোঃ বশির আহাম্মেদ ঃ বরিশাল খাদ্য বিভাগে চলছে লাগামহীন লুটপাট। সরকারি চাউল চোর জোট বেঁধে লুটেপুটে খাচ্ছে একটি চোরাকারবারি সিন্ডিকেট। বখরা অাদায় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের প্রধান হোতা বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা ফারুক হোসেন।পুরো বিভাগজুড়ে লাগামহীন লুটপাট চালালেও বরাবরই ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে জাচ্ছেন দূর্নীতির এই বরপুত্র।
তার লাগামহীন অপকর্মের ফিরিস্তি শুনে অধিকাংশ মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে-তাহলে বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা ফারুক হোসেনই কী সর্বেসর্বা?
প্রসঙ্গত,রাতের আঁধারে চাল চুরির সময় খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন বিপ্লব এবং নৈশপ্রহরীসহ ৭ জনকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে থাকে ডিবি পুলিশ। গত ৮ জুন গভীর রাতে এ অভিযান চালায় বরগুনার ডিবি পুলিশ। এসময় গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ২২টি বস্তায় ৫৯৪ কেজি চাল এবং আলামত হিসেবে বেশ কিছু উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে এ ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত আরও বেশ কয়েকজন খাদ্যগুদাম থেকে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফারুক হোসেন এধরণের ঘটনার কথা অস্বীকার করে চাউল চুরির ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালান। এরপর থানা এবং স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানতে চাইলে তিনি গড়িমসি করেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জাকির হোসেন তালুকদার বাদী হয়ে ৯ জুন মঙ্গলবার বরগুনা থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা নং০৬/২০২০।
এর পর থেকেই ফারুক হোসেনের অাক্রোশের শিকার হতে থাকেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃজাকির হোসেন। বিশেষ করে মামলার প্রকৃত ঘটনা অন্ধকারে রেখে চাল চোর অাবদুল্লাহ অাল মামুনকে বাঁচাতে চাপের মধ্যে রাখা হয় তাকে। চোরাকারবারি সিন্ডিকেটের হোতা বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুক হোসেন নানা মুখী হুমকি ধামকি দিয়ে মামলার বাদী জাকির হোসেনকে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করা অব্যাহত রাখা হয়। এর ধারাবাহিকতায় জাকির হোসেনকে তড়িঘড়ি করে বরগুনা থেকে সিলেটের সুনামগঞ্জ বদলি করা হয়। সিন্ডিকেটের জিঘাংসার শিকার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, অবৈধ বদলি চ্যালেঞ্জ করে খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এর কাছে অাবেদন করেছেন। তিনি দাবী করেন, ফারুক হোসেন উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাকে হয়রানি করার চেষ্টা করছেন এ কারনেই তিনি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ফিরে পেতে অাইনি ব্যাবস্থা গ্রহনের জন্য অাবেদনে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি অারো জানান, আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুক হোসেন দাপ্তরিক কাজে বরাবর উদাসীন। অফিস চলাকালীন সময় নিজের বাস ভবরের অট্টালিকার ১০ তলার ছাদে বসে মোবাইল ফোনে সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রনে ব্যস্ত থাকেন।
অপরদিকে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সুত্র জানায় বরিশাল বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারুক হোসেনের চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুনের বরিশাল, বরগুনা, অামতলী, পটুয়াখালী ছাড়াও রাজধানীতে রয়েছে সম্পদের পাহাড়। পটুয়াখালী পিটিঅাই রোড এলাকায় রয়েছে “ড্রিম প্লালেস” নামে বিশাল অট্টালিকা।
গরিবের চাল চুরি করা এই ওসিএলএসডি মামুন জড়িয়ে পড়ছে নারী কেলেঙ্কারিতে। চাউল চুরি নারী কেলেঙ্কারী সহ নানা কিসিমের অপকর্ম করেও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। বরগুনার চাল চুরির ঘটনায় ঘটেছে একই ধরনের নাটকীয় কর্মকাণ্ড। বিভাগীয় তদন্ত পরবর্তী শাস্তি ব্যবস্থার নামে নাটকীয় প্রক্রিয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত দেখিয়ে চাল চোরকে পদায়ন দেয়া হয়েছে মির্জাগঞ্জের সুবিদখালী। অপরদিকে চাল চুরি মামলায় জেলহাজত থেকে জামিনে বেরিয়ে এখনো অবস্থান করছেন বরগুনার খাদ্যগুদামের কোয়াটারে। এই চোরকে খাদ্যগুদামের কোয়াটারে রাখায় অারো চাল চুরির আশঙ্কা করা হচ্ছে।(এর পর পড়ুনঃ চোর রাজপ্রাসাদে বিচার প্রার্থীরা বনবাসে!)
বরিশাল খাদ্য বিভাগে দূর্নীতির বরপুত্র ফারুক সর্বেসর্বা!
